সাদিয়া আক্তার
গাজীপুরের মাটির ঘর দেখতে যা এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। চারপাশে গাছগাছালিতে ভরপুর। এমন মনোরম দৃশ্যপট দেখতে পাবেন গাজীপুরের পোড়াবাড়ি এলাকাসহ তার আসপাসের এলাকাতেও।
টিনের চালায় চাল বাধানো দোতলা কিংবা একতলা মাটির ঘর। সামনেই কাদা জরানো উঠান। একপাশে রান্নার ঘড়।
সচরাচর এখন আর মাটির ঘর চোখে পড়ে না। ঐতিহ্যের এই অংশটি ধীরে ধীরে স্থান পাচ্ছে স্মৃতির পাতায়।
একসময় গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ছিল মাটির ঘর। কিন্তু ইট-পাথরের দালানের ভিড়ে তা দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, মাটির সহজলভ্যতা, প্রয়োজনীয় উপকরণের প্রতুলতা আর শ্রমিক খরচ কম হওয়ায় আগের দিনে মানুষ মাটির ঘর বানাতে আগ্রহী ছিল। এ ছাড়া টিনের ঘরের তুলনায় মাটির ঘর অনেক বেশি আরামদায়ক। তীব্র শীতে ঘরের ভেতরটা থাকে বেশ উষ্ণ। আবার প্রচণ্ড গরমেও ঘরের ভেতর থাকে তুলনামূলক শীতল। এ জন্য গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মাটির ঘরের আধিক্য ছিল বেশি।
কিন্তু সেখানে এখন মাটির ঘরের দেখা মেলাই ভার।
সাধারণত এঁটেল মাটি দিয়ে এসব ঘর তৈরি করা হতো। পরিচ্ছন্ন মাটির সঙ্গে পানি মিশিয়ে কাদায় পরিণত করে ২০-৩০ ইঞ্চি চওড়া দেয়াল তৈরি করা হয়। প্রতিবারে এক-দেড় ফুট উঁচু করে ক্রমে শুকিয়ে গেলে খড় বা টিন দিয়ে ছাউনি দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘর তৈরিতে সময় লাগত দেড়-দুই মাস।
দেশে একসময় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ঘর ছিল মাটির। কিন্তু মাটির ঘর বিলুপ্ত হতে চলেছে। মাটির সঙ্গে পাটের আঁশ, প্রয়োজনীয় কংক্রিট, তক্তা ও বাঁশের ফলা ব্যবহার করে দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম মাটির বাড়ি বানানো যায়।
এ ক্ষেত্রে মানুষকে মাটির বাড়ির গুণগত মান ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সচেতন ও আগ্রহী করে তুলতে হবে।
গরমকালে ঠান্ডা ও শীতকালে গরম অনুভূত হয় এখানে। এ ছাড়া বসবাসও আরামদায়ক।